নেটওয়ার্ক মার্কেটিং এর সমস্যা ও সম্ভাবনাঃ-

বাংলাদেশে নেটওয়ার্ক মার্কেটিং এর সমস্যা ও সম্ভাবনাঃ-

পূর্ব কথা
এই ব্যবসা পদ্ধতিটি সম্পর্কে বর্তমানে বাংলাদেশে নেতিবাচক ধারণা পোষণকারী মানুষের সংখ্যা হয়তো বেশি, কিন্তু এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, সমাজের বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্ন ব্যক্তির সাথে এই   নেটওয়ার্ক মার্কেটিং ব্যবসাটি বর্তমানে সম্পৃক্ত হয়ে গেছে। কেউ এর মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করছেন, কেউ অর্থ উপার্জনের আশায় টাকা খুইয়ে গালে হাত দিয়ে বসে আছেন আর কেউবা নেটওয়ার্কারের হাত থেকে বাঁচার জন্য পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। লেখার পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তিসহ রুচিশীল মন্তব্য প্রত্যাশা করছি।


বাংলাদেশের চাকরির অবস্থাঃ-

জনসংখ্যার ঘনত্ব এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধির ক্রমবর্ধমান চাপে বর্তমানে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশে প্রতিনিয়ত সৃষ্টি হচ্ছে বেকারত্ব। সর্বোচ্চ পর্যায়ের ডিগ্রিধারী শিক্ষিত মেধাবী তরুণদের একটি অংশ পাড়ি জমাচ্ছে দেশের বাইরে, স্বদেশে তাদের চাহিদা মতো কর্মসংস্থান না পেয়ে। বেকারত্বের অভিশাপে জর্জরিত হয়ে অনেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে সার্টিফিকেট হাতে চাকরীর সন্ধানে। যার ফলে এস.এস.সি বা এইচ.এস.সি পাশ করেই এখন দেশের সম্ভাবনাময় তারুণ্যের বড় একটি অংশ দেশ ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হচ্ছে। দেশের বাইরে গেলেই যে সমস্যার সমাধান হয়ে যাচ্ছে তা নয় বরং এর ফলে সমস্যা আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে প্রতিনিয়ত। যারা পেশাহীন অবস্থায় নেই, চাকরী কিংবা ছোটখাটো ব্যবসার সাথে জড়িত তাদেরও একটা বড় অংশ আয়ের তুলনায় ব্যয়ের প্রয়োজন বেশি থাকায় হাঁপিয়ে উঠতেছে দিন দিন। তাই তাদেরকেও খুঁজতে হচ্ছে বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত আয়ের উৎস। আবার ব্যবসা করতে আগ্রহী অনেকেই পুঁজির অভাবে হতাশায় ভুগছেন। নেটওয়ার্ক মার্কেটিং ব্যবসা তাদের জন্য বাংলদেশে নিয়ে এসেছে সম্ভাবনার এক নতুন দিগন্ত।

বাংলাদেশে  নেটওয়ার্ক মার্কেটিং এর কার্যক্রমঃ

উন্নত বিশ্ব যেখানে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির ছোঁয়ায় গতিশীল, আমরা সেখানে এখনও সেকেলে ধ্যান-ধারণায় হাবুডুবু খাচ্ছি। ১৯৪০ সালে আবিস্কৃত মাল্টিলেভেল মার্কেটিং বা নেটওয়ার্ক মার্কেটিং  ব্যবসা আমাদের দেশে ১৯৯৯ সালে এলেও জনসাধারণের কাছে তা এখনও সুপরিচিত নয়। এ দেশে নেটওয়ার্ক বা মাল্টিলেভেল মার্কেটিং যে একটি ব্যবসা, বিগত ১৯ বছরেও তা অনেকেরই বোধগম্য হয়নি। যারা এমএলএম কোম্পানি পরিচালনায় আছেন তাদের বিষয়টি আরো গভীরভাবে ভেবে দেখা দরকার। জনসাধারণকে এ ব্যাপারে সচেতন করতে হবে। অনেকেই এমএলএম সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা লাভ করেন মূলত দুর্বল নেটওয়ার্কারের কারণে। যথাযথ প্রশিক্ষণ গ্রহণ না করেই অনেক নেটওয়ার্ক মার্কেটিং  কর্মী ঘরে ঘরে দাওয়াত নিয়ে ছুটে যান স্বল্প সময়ে অধিক অর্থ উপার্জনের আশায়। এ ক্ষেত্রে জনগণের নিকট সঠিক ধারণাটি উপস্থাপন করা অনেকের পক্ষেই সম্ভব হয়না। আবার প্রচলিত কিছু এমএলএম কোম্পানি পণ্য ভিত্তিক না হওয়ায় জনগণ এটাকে ইন্সুরেন্স কোম্পানি ভেবে ভড়কে যান। বেশিরভাগ মানুষই মনে করেন নেটওয়ার্ক মার্কেটিং  কোম্পানির কাজ হচ্ছে সদস্য বানানো, যা সম্পূর্ণ ভুল। কেউ কেউ ভুল তথ্য সরবরাহ করে  নেটওয়ার্ক মার্কেটিংকে হারাম ব্যবসা বলে ইসলাম প্রিয় জনতাকে বিশৃঙ্খল করতেও কার্পণ্য করেন না। নিজে এমএলএম এর জ্ঞান অর্জন না করেই এ সম্পর্কে কিছু বলা কতটুকু যক্তিসঙ্গত হতে পারে তা সংশ্লিষ্টদের বিবেকের কাছেই ছেড়ে দিচ্ছি।



বাংলাদেশে নেটওয়ার্ক মার্কেটিং  সমস্যা ও সম্ভাবনাঃ-

নেটওয়ার্ক মার্কেটিং সম্পর্কে ধারণাঃ 


মাল্টিলেভেল বা নেটওয়ার্ক মার্কেটিং ব্যবসা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত একটি বৈধ, সৎ ও দ্রুত সম্প্রসারণশীল ব্যবসা। ১৯৪০-৪১ সালে ক্যালিফোর্নিয়ায় ‘ক্যালিফোর্নিয়া ভিটামিন’ (নিউট্রিলাইট প্রোডাক্টস ইনকর্পোরেটেড) সর্ব প্রথম মাল্টিলেভেল মার্কেটিং পদ্ধতির মাধ্যমে তাদের পণ্য বিপণন শুরু করে, যার উদ্যোক্তা ছিলেন ক্যালিফোর্নিয়ার একজন কেমিষ্ট ডঃ কার্ল রেইন বোর্গ । ১৯৫৮ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সংসদীয় বিলের মাধ্যমে মাত্র ১০ ভোট বেশি পেয়ে ফ্র্যাঞ্চাইজের পাশাপাশি এমএলএম সিস্টেম সারা বিশ্বে মার্কেটিং করার স্বীকৃতি লাভ করে। এর পর থেকেই এর বিকাশ হচ্ছে দ্রুততর গতিতে।

এই ব্যবসাটি শুধুমাত্র বিভিন্ন দেশের আইন দ্বারাই স্বীকৃত নয়, বরং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ উন্নত বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় সমূহের কারিকুলামেও এ বিষয়টি অন্তর্ভূক্ত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয়িস বিশ্ববিদ্যালয়, শিকাগো এবং লং আইল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয় সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেটওয়ার্ক মার্কেটিং  উপর কোর্স রয়েছে। আমাদের দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ/এমবিএ কোর্সে ও এখন এ পদ্ধতিটি অন্তর্ভূক্ত।
বর্তমানে সারা বিশ্বে ১৫০টিরও বেশি দেশে ১৫-২০ হাজারের বেশি প্রতিষ্ঠিত কোম্পানি এই পদ্ধতিতে তাদের পণ্য এবং সেবা বিপণন করে আসছে। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে  
নেটওয়ার্ক মার্কেটিং ব্যবসা বর্তমানে অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং সেখানে অনেকগুলো কোম্পানি কাজ করছে। মালোয়েশিয়াতে ৮০০টিরও বেশি কোম্পানি সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। বিশ্বের বহুল পরিচিত নেটওয়ার্ক মার্কেটিং কোম্পানি হচ্ছে আমেরিকার ‘এমওয়ে কর্পোরেশন’।

এছাড়া আরো কয়েকটি উল্লেখ্যযোগ্য কোম্পানি হচ্ছে- এভোন, নিউ ভিশন ইন্টারন্যাশনাল,টিয়েন্স গ্রুপ, মেলালুকা, হার্বালাইফ ইন্টারন্যাশনাল, উসানা, শ্যাকলী, প্রি-পেইড লিগ্যাল, লংজীবিটি নেটওয়ার্ক ইত্যাদি। বাংলাদেশে যে সমস্ত এমএলএম কোম্পানি তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে এগুলোর মধ্যে নিউওয়ে বাংলাদেশ (প্রাঃ) লিঃ, ডেসটিনি ২০০০ লিঃ, অথেনটিক ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল লিঃ হেল্পলাইন ডিসট্রিবিউশন লিঃ, বিকল্প ফার্মা, তিয়ানশি, আপট্রেন্ড টু ইউ বাংলাদেশ লি:, পিনাকল, মডার্ণ হারবাল, ডিএক্সএন, ম্যাকনম ইন্টারন্যাশনাল লি:, স্বদেশ সোর্সিং লি:, স্বদেশ কর্পোরেশন লি:,  ভিশন প্লাস ইন্টারন্যাশনাল লি:, ড্রিম প্লাস, এনেক্স ওয়াল্ড ট্রেড লি:, মেন্টর ইন্টারন্যাশনাল লি:, মাতৃভূমি ইন্টারন্যাশনাল লি:, লাইফওয়ে, ভিনশন ইন্ডাস্ট্রিজ বাংলাদেশ লি:, জীবনধারা লিমিটেড, র্যাভনেক্স, ইজেন ইন্টারন্যাশনাল লি:, দি ব্যাঙ্গল ওয়ে প্রা. লি:, আর্থ ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম লি:, সাকসেস গ্লোবাল কর্পোরেশন লি:, ড্রিম প্লান ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল লি:,   ইলিংকস, লাইফ কনসর্টোয়িাম (প্রা.) লি.; এপার্টমেন্ট মার্কেটিং লি.; অ্যাসুরেন্স (বিডি) লি.; এম্বিশন ড্রিম মার্কেটিং কো.; ব্রাভো আইটি ইন্টারন্যাশনাল লি.; চলনবিল ট্রেড এ্যান্ড কমার্স (প্রা.) লি.; এনকারেজ ট্রেডিং লি.; ফরএভার লিভিং প্রোডাক্টস বাংলাদেশ লি.; ফেইথ মার্কেটিং সিস্টেম লি.; ফোর স্কোয়ার এন্টারপ্রাইজ; গণ ই ওয়ার্ল্ড ওয়াইড লি.; জেওনেট লি.; গোল্ডেন ফিদার লি.; গৃহ নির্মাণ মার্কেটিং লি.; গনদর্মা মেইন স্টকিস্ট (বাংলাদেশ) লি.; গযাসিয়ার (বিডি) লি.; গ¬্যান্স গেইন কো. লি.; গৃহ-ই-মার্কেটিং লি.; গ্রিন একটিভ বিজনেস সিস্টেম লি.; গোয়ের্ডন নেটওয়ার্ক লি.; হারবা লাইফ আন্টারন্যাশনাল লি.; ইছামতি গোল্ডেন (বিডি) লি.; ইন্টারন্যাশনাল টং চেং প্রোডাক্টস (বিডি) লি.; জেফরি সোর্সিং লি.; কান্তাম বাংলাদেশ লি.; লয়েড ভিশন (প্রা.) লি.; লিবার্টি (বিডি) নেটওয়ার্ক মার্কেটিং (প্রা.) লি.; লাইফ টাইম কনসেপ্ট লি.; মাস্ক মার্কেটিং (প্রা.) লি.; মেগাপলিশ লি.; মাল্টি ফোকাস বিজনেস সিস্টেম লি.; মাল্টিভিশণ ২০১০ লি.; মাল্টি ভিশন আর্থ (প্রা.) লি.; ন্যাচারল হার্বস লি.; নাফ ইন্টারন্যাশনাল লি.; ওয়ান মিলিয়ন (প্রা.) লি.; ওশ্যান মার্কেটিং কো. লি.; প্যারামাউন্ট হেল্থ এ্যান্ড হার্বাল লি.; প্যানাসিয়া গোলাবাল নেটওয়ার্ক লি.; রেইনবো মাল্টি বিজনেস লি.; রয়্যাল ড্রিম ইন্টারন্যাশনাল লি.; রয়্যাল ড্রিম লি.; রয়্যাল ভিশন (প্রা.) লি.; রাইজিং বাংলাদেশ (প্রা.) লি.; স্যাঙ্গুইন (বিডি) প্রা. লি.; শেখ ব্রাদার্স শিপিং করপোরেশন লি.; এসএমএন গোলাবাল লি.; সুক সারি বাংলাদেশ লি.; স্বাবস ইন্টারন্যাশনাল লি.; সেলফ ড্রিম (প্রা.) লি; স্কেচ লি.; স্টান্ডার্ড বায়ো-নিউট্রিশন কো. (প্রা.) লি.; টোন এ্যান্ড টিউন নেটওয়ার্ক লি.; দ্য এইমস সলিউশন (প্রা.) লি.; দ্য ড্রিম ওয়ে টিম (প্রা.) লি.; মানসি (বাংলাদেশ) কো. লি.; ভিলেজ ওয়ার্ল্ড নেটওয়ার্ক কো. লি.; ভিশন (প্রা.) লি.; ওয়েফান্ড ফাউন্ডেশন লি:, বিজ-এইম কর্পোরেশন লি:, এমওয়ে ইন্টারন্যাশনাল লি:, নিওন বাংলাদেশ প্রা: লি:, ইউনিপে-টুইউ-বাংলাদেশ লি:, স্পিক এশিয়া অনলাইন (বিডি) লি:, টিভআই এক্সপ্রেস, লাক্সারী, লিজেন্ড ভেন্চার, ভিসারেব, ইউনিগোল্ডটু্  ইউ, গোল্ডেন ট্রেড, ইউনাইকো বাংলাদেশ লি: প্রভৃতির নাম উল্লেখযোগ্য।


নেটওয়ার্ক মার্কেটিং  পদ্ধতিতে কিভাবে পণ্য বিপণন করা হয়?

প্রচলিত পদ্ধতিতে একটি পণ্য উৎপাদিত হয়ে সরাসরি ক্রেতা বা ব্যবহারকারীর নিকট যেতে পারে না। একটি পণ্য উৎপাদন করতে যে খরচ হয় সেই খরচের সাথে লভ্যাংশ যোগ করে সংশ্লিষ্ট উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানটি একসাথে একটি এজেন্সীর কাছে পণ্যগুলো সরবরাহ করে থাকে। এজেন্সী পণ্যগুলোকে তার সুবিধামতো পাইকারী বিক্রেতাদের কাছে একটা লভ্যাংশ যোগ করে বিক্রি করে দেয়। পাইকারি বিক্রেতারা উক্ত পণ্যসমূহ খুচরা বিক্রেতাদের নিকট নিজের লভ্যাংশ রেখে সরবরাহ করে। ভোক্তা বা ক্রেতা অর্থাৎ যিনি পণ্য ব্যবহারকারী তাঁকে উক্ত পণ্যটি খুচরা দোকানদারের নিকট থেকে ক্রয় করতে হচ্ছে। ধরা যাক আব্দুল্লাহ নামে এক ভদ্রলোক চিটাগাং নিউ মার্কেট থেকে একটি কাপড়ের দোকান থেকে একটি সার্ট বা জামা ক্রয় করলেন ১০০০ টাকা দাম দিয়ে। চিটাগাং নিউ মার্কেটের ওই দোকানী সার্টটিতে লাভ করলেন মাত্র ১০০ টাকা, অর্থাৎ এই সার্টটি তিনি কোন একটি পাইকারী বিক্রেতার কাছ থেকে সংগ্রহ করেছেন ৯০০ টাকার বিনিময়ে। ওই পাইকারি বিক্রেতা আবার সার্টটিতে ২০০টাকা লাভ করেছেন, অর্থাৎ এজেন্সী থেকে তিনি সার্টটি ক্রয় করেছেন ৭০০ টাকা দিয়ে। এজেন্সী সার্টটিতে ৩০০ টাকা লাভ করেছে অর্থাৎ সার্টটি উৎপাদনকারী তাঁর খরচ এবং লাভসহ এজেন্সীর কাছে বিক্রি করেছে মাত্র ৪০০ টাকা দিয়ে। উৎপাদনকারীর যদি এই সার্টে উৎপাদন খরচ ৩০০ টাকা হয় তাহলেও দেখা যাচ্ছে তিনি সার্টটিতে ১০০ টাকা লাভ করলেন। অথচ প্রকৃত ব্যবহারকারী যিনি অর্থাৎ ভোক্তা বা ক্রেতাকে সার্টটি ক্রয় করতে হলো ১০০০ টাকা দিয়ে। মাঝখানে কয়েকটি হাতবদলের সময় সার্টটির দাম আরো ৬০০ টাকা বেড়ে গেল। যদি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানটি সরাসরি সার্টগুলো ক্রেতা/ ব্যবহারকারীর নিকট ১০০০ টাকা দামে বিক্রি করতো তাহলে ১০০ টাকার জায়গায় লাভ করতে পারতো ৭০০ টাকা। মধ্যস্বত্তভোগী বলে পরিচিত এজেন্ট, পাইকারি বিক্রেতা এবং খুচরা বিক্রেতারা এখানে অংশ নিতে পারতোনা। সে ক্ষেত্রে উক্ত উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের ক্রেতা সংগ্রহ করা কঠিন হয়ে যেত নতুবা তাকে আরো বিনিয়োগ করে ব্যবসার পরিধি বাড়াতে হতো। কিন্তু উক্ত উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান যদি এমন কোন ঘোষণা দেয়, যে এখান থেকে একটি সার্ট যিনি ক্রয় করবেন, তাঁর রেফারেন্সে আরো ক্রেতা আসলে আমি যে মুনাফা অর্জন করবো, তাঁর একটি অংশ রেফারেন্সকারী ক্রেতাকে দেয়া হবে। তাহলেই উক্ত প্রতিষ্ঠানটি ডাইরেক্ট মার্কেটিং কোম্পানি বলে গণ্য হবে। আর এই ডাইরেক্ট মার্কেটিং কোম্পানি মূলতঃ নেটওয়ার্কের মাধ্যমে পরিচালিত হয় বলেই একে নেটওয়ার্ক মার্কেটিং কোম্পানি বলা হয়। বিভিন্ন পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয় বলে, বিভিন্ন কোম্পানি বিভিন্ন নামে পরিচিতি লাভ করে। ক্রেতা সদস্যদের মধ্যে লভ্যাংশ বন্টনের ক্ষেত্রে বেশিরভাগ কোম্পানি একটি লেভেল পরিমাপ করার কারণেই এ জাতীয় কোম্পানিগুলোকে মাল্টি লেভেল মার্কেটিং বা এমএলএম কোম্পানি বলা হয়। নিচের ছকের মাধ্যমে প্রচলিত পদ্ধতির সাথে ডাইরেক্ট মার্কেটিং পদ্ধতির পার্থক্য তুলে ধরা হলোঃ

প্রচলিত পদ্ধতিঃ
পণ্য উৎপাদনকারী/ আমদানীকারক--> এজেন্সী--> পাইকাবিক্রেতা--> খুচরা বিক্রেতা--> ক্রেতা/ ভোক্তা
ডাইরেক্ট মার্কেটিং পদ্ধতিঃ
পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান/ আমদানীকারক--> সরাসরি ক্রেতা/ ভোক্তা।
প্রচলিত পদ্ধতিতে পণ্য বিপণনের জন্য প্রচুর টাকা খরচ করে বিজ্ঞাপন দেওয়ার প্রয়োজন থাকলেও নেটওয়ার্ক মার্কেটিং পদ্ধতিতে কোন বিজ্ঞাপনেরই প্রয়োজন হয় না।

এরকম আরো নেটওয়ার্ক মার্কেটিং সম্পর্কে জানতে আমাদের সাথে থাকুন।ধন্যবাদ

Change your mind and Change life.

Post a Comment

0 Comments